মেহেরপুরে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা।

dainikmeherpurdainikmeherpur
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  11:07 AM, 27 June 2023

মেহেরপুরে ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে কামারদের ব্যস্ততা।

জেলার সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও গ্রামের কামারশালায় টুংটাং শব্দে দা, বটি, ছুরি, চাপাতি ও হাঁসুয়াসহ কোরবানির পশু জবেহ ও গোশত কাটার সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় যেন শেষই হচ্ছে না। প্রতিটা কামারশালাতে এখন শোনা যাচ্ছে হাতুড়ি পেটানোর টুংটাং শব্দ। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুন রঙ্গা লোহার খন্ড। কেউ অকেজো হয়ে যাওয়া দা ও ছুরিতে শান দিচ্ছেন। কেউ বা আবার হাপুর টানাতে ব্যস্ত রয়েছেন, কয়লার আগুনে বাতাস দিতে। নতুনভাবে সরঞ্জাম তৈরি এবং পুরনো গুলো শান দিতে ব্যস্ততার শেষ নেই। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলবে এ ব্যস্ততা।
তবে কয়লা ও লোহাসহ অন্যান্য সরঞ্জামের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বের মতো আর লাভ নেই এ পেশায়।
তাছাড়া বছরের অন্যান্য দিনগুলোতে তেমন কাজ না থাকায় অলস সময় কাটাতে হয়। শুধু ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাতে বাড়ে কর্ম ব্যস্ততা। তাই প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি, কেউ কেউ রাত অবধি পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
একসময় সকালে ঘুম থেকে উঠলেই শোনা যেতো কামারশালার টুংটাং শব্দ। তা এখন শুধুই স্মৃতি। কেননা, কামারদের তৈরি তৈজসপত্রের স্থান দখল করেছে বিভিন্ন আধুনিক ওয়ার্কশপে যন্ত্র দ্বারা তৈরি হওয়া দা, বটি ও কাস্তেসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র।
৯০ দশকের দিকে গরু, মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ির নতুন চাকায় লোহার হাল তুলত কর্মকাররা। লাঙ্গলের ফলও পোড়ানো হতো প্রতিদিন সন্ধায়। কিন্তু গরু, মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ি বিলুপ্ত হওয়ায় সেটা থেকেও তারা বঞ্চিত।
জেলার গাংনী উপজেলার মাইলমারী গ্রামের সাবুর আলী জানান, এখন ব্যবসায় মন্দা চলছে। কোরবানি ব্যতিত বছরের অন্যান্য মাসগুলোতে আমরা কোনমতে দিন পার করি। বছরের দু’টি ঈদের কাজে কি সারা বছর চলে? এজন্যই অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন। আবার অনেকেই বাপ-দাদার পেশা লাভজনক না হলেও ধরে রেখেছেন।
এদিকে ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে দা-কুড়াল ৭’শ টাকা, হাঁসুয়া-বটি ২’শ ৫০-৩’শ টাকা, ছুরি ১’শ ৫০-২’শ টাকা এবং গোশত বানানোর কাজের জন্য গাছের গুড়ি বিক্রি হতে দেখা গেছে ১’শ ২০ টাকা-৩’শ টাকায়।

আপনার মতামত লিখুন :