জনদেউলিয়া নেতাদের ঘৃণা ভাষণ অন্তর জ্বালার বহিঃপ্রকাশ!
জামায়াত-বিএনপির নৈরাজ্য ও অগ্নি সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বছর জুড়ে সারাদেশে শান্তি সমাবেশ করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন গুলো। এই সমাবেশের কারনে নেতাকর্মী বেশ উজ্জীবিত হয়েছে। সেই সাথে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপিকে বেশ চাপে রাখতেও পেরেছে আওয়ামী লীগ।
সারা দেশের ন্যায় কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলাতেও শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে বছর জুড়েই। উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরীর নেতৃত্বে এই উপজেলাতে সর্বপ্রথম শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় আড়িয়া ইউনিয়নের নাসির উদ্দীন বিশ্বাস মহা বিদ্যালয় মাঠে। ধারাবাহিক ভাবে একে একে ১৪ টি ইউনিয়নে শান্তি সমাবেশ ও পথসভা শেষ করে গত ৬ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে দৌলতপুর সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বৃহত্তম শান্তি সমাবেশ। এই শান্তি সমাবেশে জনগণের স্বতঃস্ফূর্তো উপস্থিতি উপজেলার রাজনৈতিক ইতিহাসে লিপিবদ্ধ থাকবে বলে অনেকের ধারণা।
থানা বাজারের ৭০ উর্ধ্ব এক ব্যবসায়ী দাবী করলেন উনার বুদ্ধি বয়সে এত বড় সমাবেশ তিনি দেখেননি! তিনি যোগ করে বলেন লক্ষাধীক মানুষ উপস্থিত ছিল টোকেন চৌধুরীর নেতৃত্বে হওয়া শান্তি সমাবেশে।
বিশেষায়িত একটি সংস্থার কর্মকর্তার সাথে আলাপকালে তিনি বলেন থানার মোড় থেকে সভাস্থল, রিফাইতপুর বাজার থেকে সভাস্থল, শিতলাইপাড়া থেকে সভাস্থল, হাসপাতাল থেকে চান্দু ডাক্তার মোড় পর্যন্ত রাস্তা ছিল মিছিলে মিছিলে পরিপূর্ণ। তাদের কাছে মিছিলের একটানা ৫০ মিনিটের ভিডিও আছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী ৬ নভেম্বরের শান্তি সমাবেশে উপস্থিতি ছিল প্রায় এক লক্ষ মানুষের।
বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরীর ১৪ টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে জনগণের উপস্থিতি ছিল নজর কাড়া। যা ব্যক্তি টোকেন চৌধুরীকে করেছে আরও সমৃদ্ধ। এই নেতার মুখ থেকে এসেছে জামায়েত-বিএনপি’র সন্ত্রাসিদের প্রতিহতের ডাক। দলীয় কোনো নেতাদের প্রতি তিনি ঘৃণা ভাষণ দেননি।
গত ৮ নভেম্বর ২০২৩ সালে মথুরাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ। সমাবেশ সফল করতে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রথম সারির ১০-১২ জন নেতাকে অনেক কসরত করতে হয়েছে। এক টোকেন চৌধুরী যা লোক এনেছেন তার চার ভাগের এক ভাগ লোক আনতে রীতিমতো ঘাম ঝরেছে এসব নেতার।
বলে রাখা ভালো এদের ভিতর দুইজন নেতা ছাড়া সবাই জনদেউলিয়া। তবে ১০-১৫ হাজার(বিশেষ সংস্থার দাবী) লোক নিয়ে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশটি বিগত ৫ বছরের মধ্যে উনাদের জন্য ছিল বেশ সফল। এখন আপনারা তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে পারেন।
এই সমাবেশের মঞ্চ থেকে ঘৃণা ভাষণ এসেছে এবং তর্ক উঠেছে ভাড়াটে লোক নিয়ে আসার। জামায়াত-বিএনপিকে প্রতিহত করার জোরালো ডাক না আসলেও নিজ দলের একটি গ্রুপের প্রতি ঘৃণা ভাষণ এসেছে বেশ ঝাঁঝালো সুরে। এটার কারনে মাননীয় সাংসদের লোকসান ছাড়া লাভ হয়নি।
মাননীয় সাংসদ একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সুবক্তা হিসেবে পরিচিত। তাই তার বক্তব্য জনদেউলিয়া নেতাদের মতো হবে না এটাই প্রত্যাশা করে জনগণ। কিন্তু ৮ নভেম্বরের দেওয়া বক্তব্যের প্রথম অংশ ছিল অত্যান্ত নিম্নমানের, যা উনার সাথে যায় না। এতে জনগণ হতভম্ব হয়েছে, আশাহত হয়েছে।
সম্পাদক মন্ডলীর এক নেতা দাবী করেছেন ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়ন থেকে ২০ টি বাসে করে লোক নিয়ে এসেছিল উপজেলা যুবলীগ আয়োজিত ৬ নভেম্বরের শান্তি সমাবেশে! এটা হাস্যকর ও অন্তর জ্বালার বহিঃপ্রকাশ। কারন তার রাজনৈতিক জীবনে ক্ষমতা হয়নি ৫ শত লোক বের করার, সব সময় পরের ওপর নির্ভরশীল। এই তথাকথিত নেতার জনপ্রিয়তা বরাবরই তলানিতে। বিভিন্ন কারনে বিতর্কিত এই নেতা উপজেলা আওয়ামী পরিবারকে সব সময় খন্ডিত করে রাখেন। এতে নিজের ব্যবসায়িক ফায়দা লুটতে তার সহজ হয়। তার ঘৃণা ভাষণ বারংবার উত্তপ্ত করেছে দৌলতপুরের রাজনৈতিক অঙ্গন। এই সব নেতাই আবার রাজনৈতিক শিষ্টাচার শিখাতে আসেন!
রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া কিছু নেতার সাথে যোগ দিয়েছে তথাকথিত কিছু সাংবাদিক। যাদের প্রথম কাজ টোকেন চৌধুরীর নামে গীবত করা। কারন গীবত করলেই ঐ সব সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতারা কথিত এক পীরের থেকে মোটা অংকের উৎকোচ পাবে।
সর্বশেষ বলতে পারি টোকেন চৌধুরীর প্রতি জনসমর্থন দেখে কারো মাথা নষ্ট হয়ে যাবে আবার কারো অন্তর জ্বালা চলতেই থাকবে। আর আমরা তা উপভোগ করতে থাকবো।
লেখক
আব্দুল্লাহ বিন জোহানী তুহিন
সাধারণ সম্পাদক
দৌলতপুর রিপোর্টার্স ক্লাব, কুষ্টিয়া।